Header Ads

Header ADS

হাসি কম,কাঁদি বেশি 3 (Life Changing History)




হাসি কম,কাঁদি বেশি: 
নিহত ‘হন্তা’!


জীবনের দায়ভার সইতে না পেরে, চরম হতাশ রোনাল্ড অবস আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিল। অনেক ভেবেচিন্তে মনে হল, আত্মহত্যার সহজতম পদ্ধতি হচ্ছে, নিজের দশমতলার ফ্ল্যাট থেকে চোখবুজে লাফিয়ে পড়া। যেই চিন্তা সেই কাজ। আগপিছ না ভেবে লাফিয়ে পড়ল। একটা কাজ করে যেতে ভুল করল না, পরিবারের সদস্যদের জন্য একটা সংক্ষিপ্ত ‘সুসাইড নোট’ লিখে রেখে গেল,
‘আমার আত্মহত্যার জন্য কেহ দায়ী নহে।
জীবনযুদ্ধে পরাজয়জনিত হতাশাতেই চলে গেলাম’’
.
থেৎলানো বীভৎস লাশ তুলে নিতে সাইরেন বাজিয়ে পুলিশের গাড়ি ছুটে এল। মরদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হল। রিপোর্টে বলা হল, রোনাল্ড উপর থেকে পড়ার কারণে মরেনি। তার মৃত্যু হয়েছে মাথায় গুলি লেগে। গুলিটা কে করল, কখন করল?
পুলিশি অনুসন্ধানে বেরিয়ে এল, গুলিটা বের হয়েছে নয়তলার জানালা দিয়ে। সেখানে দুই খিটমিটে বুড়োবুড়ি বাস করে। প্রতিবেশিরা তাদের ঝগড়াঝাটির জ্বালায় অতিষ্ঠ থাকে। সকাল-বিকাল, দুপুর-রাতের বালাই নেই। সারাক্ষণ দুই সাপে-নেউলে জামাই-বউয়ের খটখটি লেগেই থাকে।
.
পাশের বাসার মহিলা পুলিশকে জানাল, অনুমানিক যে সময় রোনাল্ড ঝাঁপিয়ে পড়েছে, ঠিক সেই সময়, বুড়োজামাই পিস্তল তাক করে বুড়িকে হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছিল।
.
পুলিশের কোঁৎকা খেয়ে বিছুটি বুড়ো স্বীকার করতে বাধ্য হল, রাগের মাথায় দিগ্বিদিকজ্ঞানশুন্য হয়ে, অজান্তেই ট্রিগারে চাপ পড়ে গিয়েছিল।
পুলিশের অবাক করা প্রশ্ন,
-বুড়ি মরল না কেন?
বুড়োর ফোকলা উত্তর,
-ঝগড়া করার সময় পিস্তলটা কখনোই বুড়ির দিকে তাক করি না। বাইরে জানলার দিকে নলটা ঘুরিয়ে রাখি।
.
পুলিশ স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ল। মৃত্যুর যুক্তিসঙ্গত একটা কারণ পাওয়া গেছে। আদালতে বুড়োর উকিল তার মক্কেলকে নির্দোশ দাবি করল। বুড়ো ইচ্ছা করে হত্যা করেনি,
-কিন্তু রোনাল্ডকে না হলেও, বুড়ির ক্ষেত্রে তো ‘এটেম্প টু মার্ডার’ হয়েছে।
এবার বুড়ি মুখ খুলল,
-আমি আর ‘টম’ একঘেয়েমি কাটাতে ঝগড়া করি। একা একা থাকি। কী আর করব? ছেলে একটা থেকেও নেই। আমরা কখন মরি, আর সে সম্পত্তির ভাগ বুঝে নেবে, এর অপেক্ষাতেই সে তক্কে তক্কে থাকে। আমরা সময় কাটাতেই ঝগড়া করি। প্রতিবেশিরা ভাবে, সত্যি সত্যি বসচা করছি। টম আমার দিকে পিস্তল তাক করলেও, সে পিস্তলে কখনোই বুলেট থাকে না। সেদিন পিস্তলে কোত্থেকে বুলেট, সেটাই আশ্চর্যের!
.
পুলিশের মাথায় হাত। জাল গুটিয়ে মাছ তোলার অপেক্ষায় ছিল এতক্ষণ। পাখি ফাঁদ কেটে বেরিয়ে গেল! এখন পিস্তলে গুলি ভরে রেখেছে কে? বুড়োবুড়ির এক আত্মীয় জানাল, তাদের ছেলেকে ক’দিন আগে দেখেছে, দোকান থেকে বুলেট কিনে, একটা পিস্তলে লোড করছে।
.
বুড়ি হায় হায় করে উঠল। ছেলে ক’দিন আগে জুয়াখেলার জন্য, বাবা-মায়ের কাছে মোটা অংকের টাকা চেয়েছিল। না পেয়ে হুমকি দিয়েছিল দু’জনকেই শেষ করে দেবে। তারপর একাই অগাধ সম্পদের বনে বসবে। পেটের ছেলে হয়ে এহেন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটাবে? এমন জঘন্য কাজ করতে তার একটুও হাত কাঁপেনি? সে জানত বাবা-মা সবসময় ঝগড়া করে। একপর্যায়ে বাবা পিস্তল তাক করে ভয় দেখায়। এবং সময়মত ট্রিগারেও টিপ দেয়। তাই সুযোগটা নিয়েছে। সাপও মরবে লাঠিও ভাঙবে না। বৃদ্ধ বাবা খুনের দায় থেকে মুক্তি পেলেন।
এবার তাহলে ছেলেকে গ্রেফতার করতে হয়।
কিন্তু ছেলে এখন ধরাছোঁয়ার বাইরে!
কারণ কী?
.
.
.
.
.
.
রোনাল্ড অবসই বুড়োবুড়ির একমাত্র ‘লাডলে লড়কা’।
যে যুগপৎভাবে ‘হত্যাকারী ও নিহত’।

কোন মন্তব্য নেই

nicodemos থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.