Header Ads

Header ADS

কুরআনি ভাবনা(3-10) (You have to follow)



কুরআনি ভাবনা

কুরআনি ভাবনা: 3



১: তাওরাত: মুসা আ.-এর উপর নাযিল হয়েছে। মুসা আ.-এর ইন্তেকালের একাধিকবার তাওরাত হারিয়ে গিয়েছিল।
২: ইনজীল: বিকৃত হতে হতে ৭০-টারও বেশি ভার্শন তৈরি হয়েছিল। সেগুলোকে যাচাই-বাছাই করে, খ্রিস্টান পণ্ডিতরা চারটা ইনজীল মনোনীত করেছে। এই চারটাতেও পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে ভরপুর।
৩: বেদ: রচিত হয়েছে হাজার বছর ধরে। প্রায় ৩ হাজারেরও বেশি কবি ও দার্শনিক এই রচনায় অংশ নিয়েছে।
৪: কুরআন কারীম: একমাত্র কিতাব, যার একটি হরকত বা ‘মাত্রাও’ পরিবর্তন হয়নি। এটা শুধু মুসলমানের কথাই নয়, অমুসলিম গবেষকরাও বলেন।
৫: কুরআন কারীম শুধু যে পরিবর্তিত বা বিকৃত হয়নি তা নয়, কুরআন পুরো মানবজাতিকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে রেখেছে, কারো পক্ষে যদি সম্ভব হয়, তাহলে কুরআনের মতো একটি আয়াত এনে দেখাক দেখি!


কুরআনি ভাবনা: 4
রাব্বে কারীম বলেছেন, শুকরিয়া আদায় করলে, আল্লাহ বান্দার নেয়ামত বাড়িয়ে দেবেন। আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করা, স্বতন্ত্র ইবাদত। শুকরিয়া আনেক বড় ইবাদত। পরম কৃতজ্ঞতার সাথে একবার ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলা যেমন শোকর। তেমনিভাবে অন্তরে আন্তরে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ গদগদ থাকাও শোকর। শোকর দুইভাবে আদায় করা যায়,
ক: অন্তরের আচরণের মাধ্যমে।
খ: আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতাজ্ঞাপক উচ্চারণের মাধ্যমে।

আলহামদুলিল্লাহ।

কুরআনি ভাবনা: 5
১: ইহুদীদের একটি বৈশিষ্ট্য হল, আল্লাহপ্রদত্ত কিতাবের পছন্দসই কিছু অংশের প্রতি ঈমান রাখা আর নিজের মনোপুত না হওয়া অংশের সাথে কুফরি করা।
২: একজন বলল, তাদের ‘প্রতিষ্ঠানে’ ধারাবাহিক কুরআন তরজমার দরসে, সূরা তাওবা বাদ দিয়ে কুরআন তরজমা পড়ানো হয়েছে। অবিশ্বাস্য ঠেকল। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ঘটনা সত্যি।
৩: এই যে সতর্কতা বা ভয় বা আশংকা, এসব কিন্তু একদিনে তৈরি হয়নি। দিনে দিনে দেনা বেড়েছে। এখনো সময় আছে সতর্ক হওয়ার।

কুরআনি ভাবনা: 6
আমার জীবনের সবচেয়ে বেশি দাগ কাটা উপদেশটি ছিল আমার পিতার। তিনি বলেছিলেন,
-বেটা, এমনভাবে কুরআন কারীম তিলাওয়াত করবে, যেন কুরআন তোমার উপরই এখন নাযিল হচ্ছে। আল্লাহ বলছেন আর তুমি গভীর মনোযোগে শুনে শুনে, বুঝে বুঝে পড়ার চেষ্টা করছ।
-আল্লামা ইকবাল রহ.।

কুরআনি ভাবনা: 7
মানুষ প্রথমে কুরআন ছেড়ে হাদীসের দিকে ধাবিত হয়েছে। তারপর হাদীস ছেড়ে ইমামগনের বক্তব্যের দিকে ধাবিত হয়েছে। তারপর ইমামগনের বক্তব্য ছেড়ে ‘মুকাল্লিদদের’ রীতিনীতির দিকে ধাবিত হয়েছে। তারপর মুকাল্লিদদের অন্ধ তাকলীদ ছেড়ে জাহেল ও তাদের ভ্রান্তির দিকে ধাবিত হয়েছে। এভাবেই একটি উম্মত তাদের শক্তি হারিয়ে বসেছে।
-শায়খ গাযযালী রহ.।

কুরআনি ভাবনা: 8
মনে বড় ব্যথা নিয়ে এসেছিল। বাবা মাযারপন্থী। দুনিয়ার সব খাজাবাবার অন্ধভক্ত। মীলাদ-কেয়াম-ওরশের নামে জানফিদা। এলাকার মসজিদে নামায পড়তে যায় না। কারণ, ইমাম কওমী আলেম খারেজী। বোঝালেও বোঝে না। উল্টো এমনসব কথাবার্তা বলে, ভয়ে চুপ মেরে যেতে হয়।
-কুরআন পড়তে পারেন?
-জি¦, তবে খুবই অশুদ্ধ। এলাকার নুরানী মক্তবেরও বিরোধিতা করেন। তার মতে, তারা আগে যেভাবে পড়েছেন, সেটাই ‘সহীহ’। তার পীরবাবারও একই মত। কোনও বই নিয়ে দিলেও পড়েন না। বাংলা খুব একটা পড়তেও পারেন না।
-এককাজ করতে পারবে, বাড়ি গেলে সুযোগমতো তাকে কুরআন কারীম তিলাওয়াত করে শোনাবে।
-শুনতে চান না। আমার পড়া নাকি শুদ্ধ নেই।
-বলো কী! এ যে ভয়াবহ ব্যাপার! আচ্ছা, ভুল হলেও জোর করে সুযোগ বের করবে। যেভাবেই হোক তাকে কুরআন শোনাতে হবে। এ-ছাড়া আর বিকল্প কোনও উপায় মাথায় আসছে না। তোমাকে হতে হবে ইবরাহীম আ.-এর মতো। তার বাবাও ছেলের হককথা শুনতে চাইতেন না। কিন্তু ছেলে ইবরাহীম হাল ছাড়েননি। বাবা হুমকি পর্যন্ত দিয়েছেন। ইবরাহীম দমে যাননি। দাওয়াত দিয়ে গেছেন। তুমি মাদরাসায় কুরআন পড়ো। কুরআন তোমার সামনে ইবরাহীমের আদর্শ পেশ করছে। তুমিও তোমার বাবাকে কুরআন শোনাও। কুরআন ‘নূর’। কুরআন শিফা। কুরআন হিদায়াত। কুরআন আলো। ইন শা আল্লাহ। তোমার বাবার আশু আরোগ্য লাভ হবে। বাস্তবে হলোও তাই। প্রথম প্রথম কুরআন শুনতে চরম গাঁইগুঁই করলেও, পরে ধীরে ধীরে নতিতে এসেছেন। কুরআনের ছোঁয়ায় বদলে না গিয়ে উপায় আছে?

কুরআনি ভাবনা: 9
কুরআন কারীম ‘বুস্তানুল আরিফীন’। আল্লাহকে যারা চিনতে চান, যারা আল্লাহকে চেনার পথে বের হন, তাদেরকে ‘আরিফ’ বলা হয়। কুরআন কারীম আল্লাহকে চেনার শ্রেষ্ঠতম বুস্তান। বাগান। এই বাগানে আল্লাহকে চেনা যায়। এই বুস্তানের প্রতিটি ফুলে আল্লাহকে চেনার ঘ্রাণ পাওয়া যায়। এই বাগানের প্রতিটি লাইনে আল্লাহকে জানার ‘রঙ’ পাওয়া যায়। এই বাগানে আল্লাহকে পাওয়ার তরীকা পাওয়া যায়।

কুরআনি ভাবনা: 10
১: বর্ষায় নতুন বানের পানি এলে, মাছেরা ডিম পাড়ে। ছানাপোনা ফোটায়। শোলমাছও একঝাঁক ‘পুনপুনি’ নিয়ে ঘোরে। এত্তগুলো সন্তানের গর্বিত মা হয়ে, মনের আনন্দে ভেসে বেড়ায়। ছানাপোনাগুলো নবজলে হুটোপুটি করে বেড়ায়। এত্তটুকুন বয়েসেও, পোনাগুলো শত্রুমিত্র চিনতে ভুল করে না। যেই মানুষ বা পাখি কাছাকাছি আসে, অমনি পোনাসোনাগুলো সুর-সুড়ৎ করে লুকিয়ে পড়ে।
২: প্রশ্ন হল পোনাগুলো কোথায় লুকোয়? তাদের মায়ের মুখে গিয়ে লুকোয়। যখনই কোনও বিপদ আসে, মা-শোল মুখব্যাদান করে দেয়। পোনাগুলো সব গিয়ে মায়ের মুখগহ্বরে আশ্রয় নেয়। শোল-মা পোনাদের নিয়ে পানির আরও গভীরে চলে যায়। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বিপদমুক্ত হওয়া পর্যন্ত মা আর মুখ খোলে না।
৩: আমরা হলাম শোলপোনার মতো। কুরআন কারীম ‘শোলমায়ের’ মতো। কুরআন কারীম আমাদের দিকে সবসময় হাত বাড়িয়েই আছে। আমরা বিপদে আপদে, সুখে দুঃখে যখনই কুরআনের দিকে ছুটে যাবো, কুরআন আমাদেরকে আশ্রয় দেয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। আমি কুরআনের পক্ষপুটে আশ্রয় নিতে দেরি, যাবতীয় কুফর-শিরকের বিপদ থেকে মুক্তি পেতে দেরি হবে না। সামান্য শোলপোনা মায়ের পেট থেকে বের হওয়ার পরপরই তার ‘আশ্রয়কেন্দ্র’ চিনে যায়। আমি বুঝশক্তিসম্পন্ন মানুষ হয়েও কেন আশ্রয়কেন্দ্র চিনতে ভুল করি?

কোন মন্তব্য নেই

nicodemos থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.