Header Ads

Header ADS

Daily Life part 2



দিনলিপি-১৭৩৫
(০১-০৮-১৯)
শুদ্ধতার সনদ!

-
১: কুরআন কারীম হাতে নিলে, পৃষ্ঠা ওল্টাতে ওল্টাতে প্রায়ই অজান্তে সূরা নূরে চলে যাই। সবচেয়ে প্রিয় তিনজন মানুষের কষ্টটা বোঝার চেষ্টা করি। ইফকের আয়াতগুলো পড়ে, চুপচাপ হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হতে থাকে। নবীজি সা., আবু বকর ও আয়েশা রা.-এর সীমাহীন মনোবেদনার কল্পনা করে, মনটা ছটফট করে ওঠে।
২: পাশাপাশি কল্পনার চোখে দেখার চেষ্টা করি, সাফওয়ান বিন মু‘আত্তাল রা.-কে। যার সাথে আম্মাজান আয়েশা রা.-কে জড়িয়ে মুনাফিকরা মদীনায় কুৎসা রটনা করেছিল। ওই দুর্যোগময় সময়ে, প্রায় মাসখানেক ওহী আসা বন্ধ ছিল। সেই অন্তবর্তী সময়ে, ফুলের মতো নিষ্পাপ চরিত্রের অধিকারী, হযরত সাফওয়ান লজ্জায় কতটা অধোবদন হয়ে মদীনায় বাস করেছিলেন? ইফকের আলোচনায়, আম্মাজানের কষ্টের কথা সবার বেশি মনে থাকলেও, এই অধমের কেন যেন, সাফওয়ান রা.-এর কষ্টের কথাও মনে পড়ে।
৩: ইফকের আয়াতগুলো শেষ করে সামনে এগুলেই আসে, গৃহে প্রবেশ সংক্রান্ত আয়াত। এখানে এসে থমকে দাঁড়াই। একটা না পাওয়ার বেদনা বুকের গহীনে চিনচিন করে ওঠে।
৪: এমন কি হয় না, একটা আমল করার জন্য সবসময় মনটা ছটফট করে, কিন্তু কিছুতেই আমলটা এসে ধরা দেয় না। তাওফীক হয় না। বারবার চেষ্টার করার পরও আমলটা নসীবে জোটে না?
৫: একটি আমল আছে, খুবই সহজ। আমলটা করতে পারলে, আল্লাহর পক্ষ থেকে বিরাট স্বীকৃতির নিশ্চয়তা। অনেকবার চেষ্টা করেও আমলটা করে উঠতে পারছি না। আমল না বলে ‘আখলাক’ বলাই শ্রেয়।
৬: আমলের আয়াতটা পড়ি,
فَإِن لَّمۡ تَجِدُوا۟ فِیهَاۤ أَحَدࣰا فَلَا تَدۡخُلُوهَا حَتَّىٰ یُؤۡذَنَ لَكُمۡۖ وَإِن قِیلَ لَكُمُ ٱرۡجِعُوا۟ فَٱرۡجِعُوا۟ۖ هُوَ أَزۡكَىٰ لَكُمۡۚ
তোমরা যদি তাতে (ঘরে) কাউকে না পাও, তবুও যতক্ষণ পর্যন্ত তোমাদেরকে অনুমতি দেওয়া না হয়, তাতে প্রবেশ করো না। তোমাদেরকে যদি বলা হয়, ‘ফিরে যাও’ তবে ফিরে যেও। এটাই তোমাদের পক্ষে শুদ্ধতর (নূর ২৮)।
৪: কোনও কোনও মুহাজির সাহাবী, আজীবন আক্ষেপ করে গেছেন, এই আয়াতের শেষাংশের উপর আমল করতে না পেরে। আক্ষেপ করার মতোই একটি আমল।
৫: আমলটা কী? আমি কারও বাড়ি গেলাম। দরজায় টোকা দিলাম। ভেতর থেকে আওয়াজ এল, এখন দেখা করতে পারব না, ফিরে যাও। আমি বিনাবাক্যব্যয়ে ফিরে গেলাম।
৬: ঘটনা এমনটা ঘটলে, রাব্বে কারীমের দৃষ্টিতে আমার ফিরে যাওয়াটা কেমন? আমার ফিরে যাওয়াটা হবে (أَزۡكَىٰ) শুদ্ধতর একটি কাজ। আমার রবের কাছে আমি একজন ‘শুদ্ধতর’ বান্দা।
৭: আমলটা জীবনে একবারও করার সুযোগ হয়নি, এমন নয়। বেশ কয়েকবার হয়েছে। কিন্তু তখন আমলটা সম্পর্কে সচেতন ছিলাম না। এমনও হয়েছে, গভীর রাতে অসহায়ের মতো আশ্রয়ের জন্য গিয়েছি। দরজা থেকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রচণ্ড শীতে হি হি করে কাঁপতে কাঁপতে মাহফিলের খোলা মাঠে পুরো রাত কাটাতে হয়েছে।
৮: মাঝেমধ্যে একটা প্রশ্ন জাগে, অনেকে আছেন, পেশাগত কারণে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়। তারা হয়ত নিয়মিত এই আমলের আওতায় পড়েন। ব্যবসার জন্য বা ভিক্ষার জন্য গেলে, তারা কি ‘আযকা’ বা শুদ্ধতর হবেন? মনে হয় না।
৯: কয়েকটা কৌতুহল জানিয়ে রাখি, উত্তর জানার আগ্রহে নয়, এমনি জানানো,
ক: কেউ কি আছেন, যিনি আমলটা করে আল্লাহর পক্ষ থেকে ‘সনদ’ লাভের চেষ্টা করেন?
খ: প্রিয় মানুষগুলোর কষ্ট অনুভব করার জন্য, সময়ে সময়ে সূরা নূর খুলে বসা হয়?
গ: সাফওয়ান বিন মু‘আত্তাল রা.-এর কষ্টের কথা আলাদা করে মনে পড়েছিল কখনো?

কোন মন্তব্য নেই

nicodemos থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.