Life Experiance part 4
দিনলিপি-৪
(০২-০৯-১৯)
ইলমের প্রকার!
(০২-০৯-১৯)
ইলমের প্রকার!
-
ইলম দুই প্রকার,
ক: ইলমুত তাশরী‘(عِلمُ التشريع)।
খ: ইলমুত তাকবীন (علم التكوين)।
১: ইলমুত তাশরী‘ হল শরীয়তের ইলম। দ্বীনের ইলম। এই ইলম দ্বারা আখেরাতের পাথেয় অর্জন করা যায়। হক-বাতিল চেনা যায়। আল্লাহর প্রিয়পাত্র হওয়ার উপায় পাওয়া যায়। এই ইলম একমাত্র নবীগনের কাছেই পাওয়া যায়। আল্লাহর পাঠানো কিতাবে পাওয়া যায়।
২: ইলমুত তাকবীন। জগত ও জীবন সম্পর্কিত ইলম। এই ইলম দ্বারা জীবন ও জগতে বেঁচে থাকার উপায়-উপকরণ অর্জন করা যায়। এই ইলম দ্বারা সুঁই থেকে শুরু পারমাণবিক বোমা পর্যন্ত বানানো হয়। এই ইলম আল্লাহ মুমিন-মুশরিক উভয়কে দান করেন।
৩: শুরুর দিকে অনেক নবীকে আল্লাহ তা‘আলা ইলমুত তাকবীন দিয়ে পাঠিয়েছিলেন। তারা উম্মতগনকে দুনিয়ায় বসবাস করার উপায়-উপকরণ সম্পর্কে শিক্ষা দিতেন।
৪: কাফের সম্পর্কে দু’টি বিষয় পরিস্কার থাকা জরুরী
ক: কাফেরের কুফরি চিন্তা।
খ: কাফেরের দুনিয়াবি চিন্তা বা ইলমুত তাকবীন।
৫: কাফের থেকে ইলমুত তাকবীন নেয়া যাবে। নবীগন নিয়েছেন। সাহাবীনগন নিয়েছেন। কাফের উদ্ভাবিত বিশেষ কোনও যুদ্ধকৌশল, কাফের উদ্ভাবিত বিশেষ কোনও উপকারী জাগতিক জ্ঞান গ্রহণ করতে শরীয়ত বাধা দেয় না। ক্ষেত্রবিশেষে উৎসাহিত করে। খন্দকের যুদ্ধে নবীজি সা. পারস্যের পরিখার কৌশল গ্রহণ করেছেন। হুনায়নের জিহাদে নবীজি সাফওয়ান বিন উমাইয়ার কাছ থেকে ভাড়ার বিনিময়ে অস্ত্র নিয়েছিলেন। এমনকি সাফওয়ান অস্ত্র তদারক করার জন্য হুনায়নে নবীজি সা.-এর সাথেও ছিল। তখনও তিনি ইসলাম গ্রহণ করেননি।
৬: কাফেরের কাছ থেকে জাগতিক জ্ঞান ও জাগতিক বিষয়ে সাহায্য গ্রহণ করা যাবে। যেমন কাফের রাষ্ট্র থেকে বিমান কেনা হল, তার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কাফের ‘ইঞ্জিনিয়ার’ সাথে আনা। মদীনার ইহুদিদের থেকেও জাগতিক বিষয়ে মুসলমানরা সাহায্য-সহযোগিতা নিতেন।
৭: কাফের থেকে কুফরি চিন্তা ও আকীদা গ্রহণ করা যাবে না। কাফেরের কাছ থেকে এমন ইলমও নেয়া যাবে না, যা বাহ্যিকভাবে দেখতে ইলমুত তাকবীন মনে হয়, বাস্তবে সেটা ইলমুত তাশরী‘ বা ইলমুত তাশরী‘কে প্রভাবিত করে।
৮: রাষ্ট্র পরিচালনা, সমাজ পরিচালনা এসব ইলমুত তাশরীয়ের অন্তর্ভুক্ত। এটাকে জাগতিক বিষয় বলে চালিয়ে দিয়ে, গণতন্ত্র আমদানি করার কোনও সুযোগ নেই। ইসলামে রাষ্ট্রপরিচালনার জন্য ‘খিলাফাহপদ্ধতি’ আছে। এই বাইরে অন্য কোনও চিন্তা গ্রহণের সুযোগ নেই। কাফেরের কাছে হাত পাতারও প্রয়োজন নেই।
৯: ওয়াসা, সুয়ারেজ, ট্রাফিকবাতি, সড়কনির্মাণ ইত্যাদি ইলমুত তাকবীনের অন্তর্ভুক্ত। এগুলোর নির্মান বা ব্যবস্থাপনাকৌশল প্রয়োজনে কাফের থেকে নিতে বাধা নেই।
১০: অনেকে না জেনে বালকসুলভ প্রশ্ন করে, কাফেরের আবিষ্কৃত ফেসবুক কেন ব্যবহার করেন? গাড়ি-উড়োজাহাজ কেন ব্যবহার করেন? তাদের জানা উচিত, এসব ইলমুত তাকবীনের অন্তর্ভুক্ত। জীবন ও জগতের সুবিধার্থেই এসবের আবিষ্কার হয়েছে। এসবের সাথে ইলমুত তাশরীয়ের কোনও বিরোধ নেই।
১১: আর কাফেরের সাথে সমঝোতা চুক্তি? তাতেও শরীয়তের কোনও বাধা নেই। কিন্তু যে কাফের অনবরত মুসলিম হত্যায় লিপ্ত, তার সাথে সমঝোতা চুক্তিতে অবশ্যই শরীয়তের আপত্তি আছে।
১২: ইলমুত তাশরীয় যেমন আল্লাহ তার প্রিয় বান্দা নবীগনকে দিলেও, তা শিক্ষা করা ও ধারণ করার অধিকার কাফেরের আছে, তদ্রƒপ ইলমুত তাকবীন কাফের আবিষ্কার করলেই তার একার হয়ে যায় না। আল্লাহ তা‘আলাই কাফেরকে ইলমুত তাকবীন দান করেছেন। তাই কাফেরের উদ্ভাবন করা ইলমুত তাকবীনেও মুমিনের অধিকার আছে। দুনিয়া এভাবেই চলে আসছে।
১৩: তবে ঝামেলা বাধে, কোনও কোনও মুমিন কাফেরের নির্দিষ্ট কোনও কুফরি আকীদা বা ভ্রান্তিকে ‘ইলমুত তাকবীন’ ভেবে গ্রহণ করে বসে। তারা মনে করে, এটা জাগতিক বিষয়। এটা গ্রহণ করলে তার জীবন ও জগত সুখময় হবে। বাস্তবে সেটা ইলমুত তাকবীন নয়; ইলমুত তাশরীবিরোধী ভ্রান্ত চিন্তা। সংসদীয় নির্বাচনের অধীনে ভোটদানও তেমন একটা ব্যাপার। আপাতদৃষ্টিতে ভোটদানকে নিরীহ মনে হয়। বাস্ততে এই ভোটই ধীরে ধীরে গণতন্ত্রের মতো জঘন্যতম ‘শিরকে’ নিয়ে যায়
কোন মন্তব্য নেই